লেবেল

নিজেকে এখনও গুছিয়ে নিতে পারিনি

৯ মার্চ, ২০১২

বিসিবির তামিম নাটকের পূর্বাপর


কপালের ভাজ সরিয়ে জ্বলে উঠতে হবে তামিমকে


অনেক নাটকের পর অবশেষে দলে ফিরলেন তামিম ইকবাল । তবে তার আগে নাটক যা হওয়ার হয়ে গেছে । নাটক না বলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক কলংকও বলা যায় । কারণ তামিমকে বাদ দেয়া না দেয়ার জের ধরে পদত্যাগ করে বসেন প্রধান নির্বাচক আকরাম খান । ক্রিকেটের ইতিহাসেই দল নির্বাচনে হস্তক্ষেপের ঘটনায় নির্বাচক পদত্যাগের ঘটনা এই প্রথম । সেই হিসেবে এটি অবশ্যই বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য লজ্জাজনক একটি অধ্যায় । আকরাম খান চোখে আঙুল দিয়ে দিলেন বিসিবিতে ক্রিকেটীয় যুক্তি নয় চলে রাজনৈতিক আমলাতান্ত্রিক ক্ষমতা ।

অনেকেই হয়ত বলতে পারে নিজের ভাতিজাকে বাদ দেয়ার কারণেই হয়ত আকরাম খানের পদত্যাগ । কিন্তু আসল ঘটনা হল নির্বাচকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দেয়া , এবং তাদের নির্বাচিত দলে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপই এই পদত্যাগের কারণ । বলা যায় এটি অনেকদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ । নির্বাচকদের নির্বাচন করা দলে কাঁচি চালানো এই প্রথম নয় । জেমি সিডন্সের সময় তিনি রকিবুলকে দলে চাইলেও অনেক সময় বোর্ড থেকেই রকিবুলকে বাদ দেয়া হয়েছিল ।

বিশ্বকাপের সময় গঠন করা হয়েছিল টেকনিক্যাল কমিটি । এই কমিটির কাজ ছিল নির্বাচকদের দেয়া দলে কাঁটছাট করে নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড়কে ঢুকানো । যে কারণে মোহাম্মদ আশরাফুল গত বিশ্বকাপের দলের সেরা পারফর্মার হয়েও এবার বিশ্বকাপে ঘরের মাঠেই কয়েকটা ম্যাচে দর্শক ছিলেন । বিশ্বের কোন দেশের ক্রিকেট বোর্ডে এমন টেকনিক্যাল কমিটির খোজ পাওয়া যাবে না যারা নির্বাচকদের কাজে হস্তক্ষেপ করা জন্য গঠিত হয়েছে ।

আবার শোনা যাচ্ছে যে বোর্ডের কার্যনির্বাহী সদস্যদের মধ্যে কোন ক্রিকেটার রাখা হবে না । এর মানে হল বোর্ড পুরোপুরি চলে যাবে রাজনৈতিক নেতাদের হাতে , কিছু অক্রিকেটীয় মস্তিষ্কের হাতে । এসব অক্রিকেটীয় মস্তিষ্ক দেশের ক্রিকেটকে কোথায় নিয়ে যাবে তা একটি শিশুরও খুব ভাল করেই জানা আছে । এই কারণেই বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধ্যে ব্যবস্থা নিতে সাবেক ক্রিকেটাররা আদালতে যাবার হুমকি দিয়ে রেখেছে ।

বোর্ড সভাপতির নাতীর অপছন্দ বলে আশরাফুলকে দলে নিতে না করে দেয়া হয়েছে । কি ভয়ংকর কথা । বাংলাদেশের ক্রিকেট কি তাহলে বোর্ড সভাপতির পরিবারের মনোরঞ্জনের জন্য নাকি । বোর্ড থেকে সুনির্দিষ্ট কোন দিক নির্দেশনা পাচ্ছেন না শাহরিয়ার নাফিস , অলক কাপালীর মত সিনিয়র ক্রিকেটার । জিম্বাবুয়ে সফরের ব্যার্থতার বলি হতে স্বরুপ অধিনায়কত্ব বিসর্জন দিতে হয়েছে সাকিবকে , শুধুমাত্র বোর্ড সভাপতির ইচ্ছায় । সাকিবের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে এমনও শোনা গিয়েছিল যে সভাপতি সাকিবকে দলে নিষিদ্ধ করেছিলেন । পরে সাকিব নাকি কামালের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে গেছে ।

নির্বাচকদের কাজে হস্তক্ষেপ এই প্রথম নয় । বলা চলে শুরু থেকেই এটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ছিল । বোর্ড কর্মকর্তাদের এমন কর্মকান্ডের ফলেই অকালে ঝরে গেছে আমিনুল ইসলাম বুলবুল , দূর্জয় , হান্নান সরকারের মত ক্রিকেটাররা । বোর্ড কর্মকর্তাদের জন্য একগুয়েমীর জন্য মোহাম্মদ রফিকের গায়ে লেগে গিয়েছিল ওয়ানডে স্পেশালিস্টের লেবেল । সিনিয়র ক্রিকেটারদের প্রতি বোর্ড কর্মকর্তাদের এমন একগুয়েমীর কারণেই দেশের ক্রিকেট দশ বছর আগেও যেখানে ছিল এখনও সেখানেই আছে । শুরুর মতই দলটা এখনও তরুণদেরই রয়ে গেছে । দলে নেই তারুণ্যের সাথে অভিজ্ঞতার মিশেল । যে কারণের ক্রিকেটে ধারাবাহিক সাফল্য আসছে না । এদেশে সিনিয়র হলেই বিদায়ের ঘন্টি বাজিয়ে দেয়ার ব্যাবস্থা করা হয় ।

বিতর্কের আর কোন অবকাশই নেই যে এতসব কিছুর মূলে রয়েছেন বোর্ড সভাপতি মোস্তফা কামাল এমপি । তিনিই আসল নাটের গুরু । বিসিবিতে একছত্র ক্ষমতার অপব্যাবহার করছেন তিনি । একজন বোর্ড সভাপতি একটি দেশের ক্রিকেটের অধিনায়ক । আর সেই অধিনায়ক যখন বিতর্কিত হয়ে পড়েন তখন দেশের ক্রিকেট হয়ে পড়ে অভিভাবক শূন্য , নেমে আসে অশনিসংকেত । আর যখন বোর্ড সভাপতি স্বৈরতন্ত্রিক ব্যাবস্থা প্রচলন করেন তখন বিদ্রোহ আর প্রতিবাদ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পরে । আকরাম খানের পদত্যাগ সেই প্রতিবাদেরই বহিঃপ্রকাশ

দেশের ক্রিকেট এখন একজন দক্ষ মাঝি এবং হাল ছাড়া নৌকার মত , যার গন্তব্য অনির্দিষ্ট । আর দুই দিন পরই এশিয়া কাপ । দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে এমন ঘটনা অবশ্যই প্রভাব ফেলবে । এসব ঘটনার পর দলের কাছে সাফল্য প্রত্যাশা অনেক বেশিই হয়ে যায় । দলে ফিরলেও এই ঘটনা তামিমের উপর চাপ হয়ে দেখা দেবে । ব্যাহত করবে তামিমের স্বাভাবিক খেলা । তামিম কি পারবেন সকল চাপ আর বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে নিজেকে নতুন করে চেনাতে । অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই । মাত্রই তো দুটো দিন

২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

আমি মৃত ক্যাপ্টেন মাজহারের বাবা বলছি



হ্যালো..
হ্যালো বাবা...
হুম..
কেমন আছো ?
ভালো , তুমি কেমন ?
আমিও ভালো, সকাল বেলা হাঁটাহাটি কর তো ?
হুম
হুম না বল কর কি না ?
হ্যা করি , মাঝে মাঝে মিস হয়ে যায় ,
নিয়মিত কর বাবা , ঔষুধ খেয় ঠিক মত
আচ্ছা
ভালো থেকো বাবা

ঘুমটা ভেঙে গেল মজিদ সাহেবের । সাড়ে ৪ টা বাজে । ফযরের আযান হতে অনেক দেরি । আর ঘুম ঘুম আসবে না । উঠে বসলেন মজিদ । টেবিলে রাখা পানির গ্লাসটা টেনে নিয়ে পানি খেয়ে নিলেন । কি করা যায় ? ফযরের আযানের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে । বারান্দায় গিয়ে বসে থাকা যায় । ইজি চেয়ারটায় হালকা কুয়াশা পড়ে আছে । তাই ঠান্ডা লাগছে । ভোরের আলো ফুটতে অনেক দেরি । চারিদিকে হালকা অন্ধকার । পাখিদের ডাকাডাকি এখনও শুরু হয়নি ।

কতদিন হল ? তিন বছর ? অনেক সময় । গত তিন বছরে একটিবারও মাজহারের সাথে কথা হয়নি । এখনও নিয়মিত হাটাহাটি করা হয় না , শরীরটা ভেঙে যাচ্ছে । মাজহার না বললে আর কেউই সেভাবে বলে না । আযান হচ্ছে ওযু করা দরকার

আবার বারান্দায় গিয়ে বসলেন মজিদ সাহেব । ভোরের আলো ফুটতে শুরু করছে । পূর্বের আকাশে গাঢ় কমলা আভা । পাখিও ডাকাডাকি করছে , কিন্তু পাখির চেয়ে কাকের কা কা আওয়াজটাই বেশি কানে আসছে । কাক এভাবে উত্তেজিত হয়ে ডাকাডাকি করে কখন ? যখন ওদের শোকের সময় তখন ? হয়ত । আজ মর্নিং ওয়াকে যেতে ইচ্ছে করছে না । এখানে বসতেই ভাল লাগছে । ক্যাডেট কলেজের শুরুর মাজহার প্রায়ই বলত সকালে মর্নিং ওয়ার্ক ওর ভাল লাগে না । কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটা ওর রুটিন হয়ে গেল । ছোটবেলায় অনেক আলসে ছিল ছেলেটা । সকালে ঘুম থেকে উঠতেই চাইত না । সেই ছেলেটা ক্যাডেট কলেজ এরপর সেনাবাহিনীতে । ভাবতেই অবাক লাগে । যদিও ক্যাডেটে ও পড়তে চায়নি । আমিই মনে হয় বেশি জোর করেছিলাম । সেদিন যদি জোর না করতাম আজ হয়ত ব্যাপারটা অন্যরকম হত ।
খালুজান চা , সবুজের ডাকে চোখ মেললেন মজিদ সাহেব । খালুজান আপনেরে রেডি হইতে কইছে । বাসার সবাই আজ গ্রামের বাড়ি যাইব । হুম আসছি , তুই যা ।

গাড়ির পেছন সিটে বসে জানালা দিয়ে চোখ মেলে দিলেন মজিদ সাহেব । রাস্তার দুপাশে ক্ষেত । তবে সবই ন্যাড়া । কোন সবুজ নেই । আবারও মাজহারের কথা মনে হচ্ছে । কত বয়স হয়েছিল ছেলেটার ? ২৯ । খুব বেশি না । ছেলেটা জীবনের অর্থই বুঝতে পারল না । তার আগেই চলে গেল । অথচ মনে হচ্ছে এই সেদিন ওকে স্কুলে নিয়ে গেলাম ভর্তি করাতে । অনেকটা তাড়াতাড়িই ভর্তি করিয়েছিলাম ওকে । প্রথমদিন হেডমাস্টারকে দেখেই কেঁদে ফেলেছিল ও । অদ্ভুত ছেলে আমার । কি ভীতুই না ছিল ছেলেবেলায় । অথচ বড় হয়ে দেশের সেবা করতে ঠিকই যোগ দিয়েছিল সেনাবাহিনীতে । কিন্তু আমিতো না করেছিলাম । তুমি পারবে না এত কষ্ট সহ্য করতে । অন্য কোথায় ভর্তি হও । ও কি বলেছিল এখনও পরিস্কার মনে আছে , বলেছিল "বাবা তুমি না মুক্তিযোদ্ধা, দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলে , আমি সেই সুযোগ পাইনি , কিন্তু এই সুযোগটা নিতে আমাকে না করোনা প্লিজ" । না , আমি না করিনি । বড্ড ঘুম পাচ্ছে , কিছুটা ঘুমিয়ে নেয়া দরকার

ঘুম ভাঙল সবুজের ডাকে । এসে পড়েছি । কতদিন পর এলাম ? গতবছরের এই দিনে মনে হয় শেষ এসেছিলাম । না আরেকবার এসেছিলাম । মাজহারের নামে পাঠাগার উদ্বোধন করতে । এরপর আর আশা হয়নি । আজ বাড়ি ভর্তি মেহমান । কিন্তু এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছে না । কিছুটা একা দরকার । তবে তার আগে বাড়ির পেছনটা ঘুরে আসতে হবে । না হলে মাজহার রাগ করবে । ছেলেটা আমার সেই ছোটবেলা থেকেই পরিবার পরিজন ছেড়ে বড় হয়েছে । এখনও একাই থাকে । মাঝে মাঝে মনে হয় ওর সাথে অন্যায়টা করেছি আমি । ক্যাডেট কলেজে ভর্তি না করলেই হত ।

মাজহারের কবরের পাশে এসে দাড়ালেন মজিদ সাহেব । এবছর কবরটা পাকা করা হয়েছে । তাই কিছুটা উচু হয়ে আছে । আশাপাশে জঙ্গলও কিছুটা বড় হয়ে আছে । কবরের দেয়ালটা ধরে এক দৃষ্টিতে কবরের মাটির দিকে তাকিয়ে আছেন মজিদ সাহেব

মেহমানদের বিদায় করে দিয়ে নিজের রুমে চলে এলেন মজিদ সাহেব । ভাল লাগছে না । বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে ভাবতে লাগলেন । কি হয়েছিল সেই ২৫ তারিখ ? কেনইবা বিডিআর জোয়ানরা বিদ্রোহ করেছিল ? ব্যাপারটা কি পরকল্পিত ছিল ? মনে হচ্ছে হ্যা । না হলে কেন হানিমুনের তিনদিনের দিন ছেলেটাকে ফোন করে পিলখানা ক্যাম্পে জয়েন করতে বলা হবে ? কি দোষ ছিল ওর ? আমার সাথে কথা হয়েছিল হানিমুন থেকে ফেরত আসার আগের দিন । অথচ দুদিন পরেই ছেলেটা চলে গেল । ওর শ্বশুরের সাথে শেষ কথা হয়েছিল ওর । ওর শ্বশুরকে নাকি বলতেছিল
হ্যালো , বাবা এখানে কোন একটা সমস্যা হয়েছে । সবাই খুব ছোটাছুটি করছে । জোওয়ানরা বিদ্রোহ করেছে । আমাদের সাহায্য দরকার...
পুলিশের আইজি ওর শ্বশুরের কাছে ছিল সাহায্য চাওয়ার তীব্র আকুতি । কিন্তু সেদিন কেউ ওদের সাহায্যে এগিয়ে যায়নি , কেউ না । তিন বছর হয়ে গেল প্রকৃত সত্যটা এখনও জানা যায়নি । হয়ত এজীবনে ছেলে হত্যার বিচারটা দেখে যেতে পারব না । সে আশা অবশ্য আমি করিও না । তবে আল্লাহর কাছে ঠিকই জানতে চাইব , কেন তিনি আমাকে এমন শাস্তি দিলেন । আমি কি পাপ করেছিলাম যে তিনি আমাকে ছেলের মরদেহের ভার আমার কাঁধে দিয়েছেলেন ??

জানালে দিয়ে দিনের শেষ আলোটা বিছানায় এসে পড়ছে । আমার ছেলেটাও ছিল সূর্যের মতই । কিন্তু পার্থক্য শুধু এটুকুই সূর্য ডুবে গিয়ে পরদিন আবার উঠে , কিন্তু মাজহার সেই যে গেল আর আসবে না


বিঃদ্রঃ গল্পের চরিত্র সবই সত্যি , কিন্তু গল্পটা আমার বানানো । অযথা বিতর্ক না করার জন্য অনুরোধ করছি

৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

ইতিহাসের প্রথম পরমাণু কাব্য , সাথে দুটি অনুকাব্য বোনাস(না পড়লেই মিস)

আগে কখনও কবিতা পোস্ট দেইনি । কারণ কবিতা আমি লিখতেও পারিনা , পড়তেই পারিনা । অবচেতন মনে কয়েকটা লাইন আওড়াতাম তাই ডাইরিতে লিখে রেখেছিলাম । অনুকাব্য হিসেবে সেগুলোই তুলে দিলাম । আর একটা পরমাণু কাব্য । অনুকাব্য অনেক আছে , কিন্তু সম্ভবত এইটাই ইতিহাসের প্রথম পরমাণু কাব্য
"
"
"
"
"
"
অনুকাব্যঃ

১.

শীতের নিস্তব্ধতা আমাকে গ্রাস করে নেয়
আমি ভুলে যাই , আমার আমিকে
কিন্তু হারিয়ে ফেলা তোমাকে
ভুলতে পারি না আমি কিছুতেই

২.

আমি আর আমার গাঙচিল
উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়াব মেঘের দেশে
যাবে নাকি , তুমি যাবে ??
গাঙচিল আর মেঘ রোদ্দুরের সাথে ??

পরমাণু কাব্যঃ




" ক "

এটাই কবিতা । "ক" দিয়ে ভাব প্রকাশ পায় , কথা বলা যায় । যেমনঃ তুই বল , আমরা অনেকেই বলি নে এইবার তুই ক

কেমন হইল ?

ইতিহাসের সাক্ষি সবাইকে অভিনন্দন

ছবিঃ নাফিস ইফতেখার । অশেষ কৃতজ্ঞতা তার প্রতি

২৭ জানুয়ারী, ২০১২

অবশেষে বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন , এইডা কিছু অইল ??

বাণিজ্য মেলায় গেছিলাম আইজকা । নিচের ছবি দেইখা আমি পুরাই টাশকিত
"
"
"
"
"
"
"
"


এইটা বাণিজ্য মেলার বঙ্গবন্ধু স্টলের ব্যানার । লেখা আছে

ইন বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আউট

একটু ঘুরিয়ে চিন্তা করেন বঙ্গবন্ধু ইন , বাংলাদেশ আউট

এইডা কিছু অইল

যেভাবে নাম পরিবর্তনের খেলা চলতেছে সেইদিন আর দূরে না যেদিন এই পোস্ট সত্যি হইয়া যাইব

একটা ফান পুস্ট মাত্র , সিরিয়াসলি নিয়া নিজের চুলকানী বাড়ায়েন না পিলিজ

সোহানের ভারতীয় পণ্য বর্জনের স্বপ্ন এবং বাস্তবতা

রাত আটটার বাংলা সংবাদে একটা নিউজ দেখে চমকে উঠল সোহান । সীমান্তে বিএসএফ এক বাংলাদেশী উলংগ করে পিটিয়েছে । কি নৃসংশ । দেখে আতঁকে উঠল সে । এর আগে ফেলানী এবার হাবু শেখ । এভাবে মেনে নেয়া যায় না । এবার কিছু একটা করা দরকার । করতেই হবে । কিছুক্ষণ ভেবে নিজের মাইক্রোম্যাক্স মোবাইলটা হাতে তুলে নিল সোহান । নিজের এয়ারটেল নাম্বার থেকে রাজিব কে ডায়াল করল 0167181**** । রিং হচ্ছে ওয়ান্না বি মাই ছাম্মাক ছাল্লো , নিজের অজান্তেই দুলে উঠল সোহানের শরীর ।

- হ্যালো দোস্ত বল
- নিউজটা দেখেছিস বিএসএফের নির্যাতনের টা ?
- হ্যা দেখলাম , কি নৃসংশ
- আর তো চুপ করে থাকা যায় না , এবার কিছু একটা করা দরকার ।
- কি করতে চাস বল , তোর প্ল্যান কি ? আপাতত যা পারি সেটা হল ভারতীয় পণ্য বর্জন করা । ভারত আমাদের বাজারের অনেকটাই দখল করে আছে । সো পণ্য বর্জন করলে ভারত অনেকটা ধাক্কা খাবে ।
- ওকে চল কাল ফ্রেন্ডসদের সবাইকে ব্যাপারটা ইনফর্ম করি ।
-ওকে কাল সকাল ১০ টায় রবীন্দ্র সরোবরের চলে আসিস ।
- ওকে বাই

ডিনারটা সেরে এসে তড়িঘড়ি করে নিজের ল্যাপটপটা ওপেন করে বসল সোহান । এয়ারটেলের নেট কানেকশন টা লাগিয়ে প্রথমেই ফেছবুকে ঢুকে একটা জ্বালাময়ী ভারত বিরোধী স্ট্যাটাস দিয়ে দিল । আরেকটা গ্রুপ খুলল "আসুন ভারতীয় পণ্য বর্জন করি" গ্রুপে এড করে ফেলল নিজের ফ্রেন্ডলিস্টের সকল বন্ধুকে । সেই সাথে কোলকাতার বন্ধু অমিত কেও ।

হঠাৎ মনে হল সামুর সকল ব্লগারকে একসাথে করা দরকার । ব্লগাররা অনেক ভালো । তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায় ভালো । কানে হেডফোন লাগিয়ে লিখতে বসে গেল সোহান । বাজছে গার্লফ্রেন্ডের অতিপ্রিয় গান "তেরি মেরি মেরি তেরি প্রেমকাহানী হে মুশকিল" । আধঘন্টার চেষ্টায় মুটামুটি ভালোই একটা লেখা দাঁড়িয়ে গেল । পোস্টের করার ১৫ মিনিটেই সমর্থন জানিয়ে ৩৫ কমেন্ট । পোস্ট হিট ।

রাত বাজে প্রায় সাড়ে ১২ টা । কাল রাতে রনবীর কাপুরের ""রকস্টার"" মুভিটা নামিয়েছে সোহান । দেখতে বসে গেল....

ঘুম ভাঙল একটু দেরিতেই । আম্মু ডাকছেন , নাস্তা করার জন্য । তড়িঘড়ি রেডি হয়ে টেবিলে বসে গেল সোহান । স্লাইস রুটিতে জেলি মাখানোই আছে । একটা রুটি নিয়ে গোগ্রাসে গিলতে শুরু করল । পানি টা মুখে দিয়েই দৌড় । পেছন থেকে মার চিৎকার সোনা গেল , সোহান কমপ্ল্যানটা খেয়ে যা বেটা । এই মুহূর্তে মার কথা শোনার মত টাইম নেই সোহানের । নিজের টিভিএস বাইকটা স্টার্ট করেই রবীন্দ্র সরোবর অভিমুখে চলল সোহান

জ্যামের কারণে ২০ মিনিট লেট । রাজিব আগেই এসে বসে আছে তার হাঙ্ক বাইকের উপর । আহ রাজিব বাইকটা যা কিনছে না , জোসস হইছে ভাবল সোহান

-কিরে কি অবস্থা , কখন এলি ?
- এইতো ২০ মিনিট
- গুড , আর সবাই কই ?
- আসতেছে ।
রুমেলের একটু লেট হবে , ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার থেকে ওর গার্লফ্রেন্ডকে সাথে করে নিয়ে আসবে । সো লেট
- আর বাকিরা ?
- বড়জোর দশ মিনিট লাগবে ওদের
- ওকে
- চল ওয়েট করতে করতে চা বিড়ি খাই
- হুম , চল

গাইস কাল রাতের নিউজটা তো সবাই দেখছিস নাকি । কেমন নির্মম আর নৃসংশ কল্পনা করা যায় না । এর প্রতিবাদ করা দরকার । আর কত নির্যাতন সহ্য করব বল । সবদিক থেকেই ভারত আমাদের শোষণ করছে । প্রথমে ফারাক্কা , এরপর টিপাইমুখ । পর্যাপ্ত পানি দিচ্ছে না তিস্তায় । ট্রানজিটের নামে গলা টিপে ধরেছে তিতাসের । এভাব আর কত বল । কিছু একটা করবোই এবার ।

- রনিঃ কি করতে চাস বল ?
- আমাদের প্রথম কাজ হল ভারতীয় পণ্য বর্জন করা । এরপর সুযোগ মতন ইন্ডিয়ান দূতাসের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করা । এছাড়া আর কি করব বল ।
- যাই হোক ফেচবুকে প্রচারণা চালানোর জন্য গ্রুপ খুলছি । পোস্ট দিতে শুরু করবি ইন্ডিয়া বিরোধী নিয়ে । আর আমি ব্লগারদের সংগঠিত করার ট্রাই করতেছি । যাই হোক আজ সন্ধ্যার পর শাহবাগ আসিস । পোস্টার করব কিছু
- ওকে
- ওকে

বাই দ্য ওয়ে খেলা দেখছিস আজ ? ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়ার ?
-রাজিব-হুম
- আর বলিস না, এত্ত আশা নিয়ে খেলা দেখতে বসি , খেলা শেষে আশাহত । চিন্তা কর ট্যুরে যাওয়ার আগে কত্ত কথা ইন্ডিয়া হেন করবে , তেন করবে । আর কখন , বাঁশের উপরে আছে ।
- আমি নিজেও এইবার ইন্ডিয়ারে নিয়া আশাবাদী ছিলাম । অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা যা তা , সেখানে ইন্ডিয়ার বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপ । অথচ এই ব্যাটিংটাই অস্ট্রেলিয়ার নাদান বোলারদের কাছে কেমনে ভেঙে পড়ল । না দ্রাবিড় না লক্ষণ না শেবাগ । হাহ
- তবে যত যাই বলিস টেন্ডুলাকার কিন্তু মুটামুটি ঠিকই আছে । এরেই বলে জাত ব্যাটসম্যান । সর্বকালের সেরা কি আর এমনিই বলে নাকি

মা আব্বু কোথায় ?
- ইন্ডিয়ান এম্বাসিতে গেছে , তোর চাচার ভিসাটা আজ ফাইনাল হতে পারে ।
- চাচ্চু মাদ্রাজ যাচ্ছে কবে ?
- ভিসা টা হয়ে গেলেই কয়েকদিনের মধ্যে যাবে
- এবারই কি শেষ নাকি আরও যেতে হবে ?
- ডক্টর তো বলেছিল এবারই শেষ , দেখা যাক কি হয়
- কে কে যাচ্ছে সাথে ?
- তোর চাচী , আর তোর সোহাগ ভাইয়া
- ও
- মা , আমরা আগ্রা যাচ্ছি কবে ?
- তোর আব্বুর ব্যস্ততা টা কমুক এরপর
- মা তোমার মনে আছে আমি যখন দার্জিলিং পড়তাম , প্যারেন্টস ডে তে তোমরা যেতে । আমরা ঘুরতে যেতাম । কত্ত মজাই না হত । ইশ স্কুলের বন্ধুদের খুব মিস করি এখন
- হুম মনে আছে , এখন খেয়ে নে , আমি ঘুমাবো


কিরে রনি আসল না ?
- জ্যামে আছে , বেশিক্ষণ লাগবে না মনে হয়
- পোস্টার দিয়ে কি করবি ?
- মানববন্ধনে লাগতে পারে , তাই আগে ভাগেই বানিয়ে রাখলাম
- হুম
রুমেল তোর নতুন বাইক কবে আসছে ?
- আরে পেমেন্ট তো দিয়ে রাখছি , কিন্তু আজ না কাল এভাবে সময় নিচ্ছে ।
- আর এই পালসারটা কি করবি ?
- চাচাতো ভাইয়ের সাথে ডিল হয়ে আছে , আমার টা এসে গেলে ও এটা নিয়ে নেবে
- কত কমে ছাড়ছিস ?
- ৫০ হাজার
- আরে শালা , ভালো লাভই করলি । এটাও তো অনেকদিন হল । প্রায় একবছর । তাও মাত্র ৫০ কমে ছাড়তেছিস । দারূণ

রুমেল: আচ্ছা আমরা যে প্রতিবাদ করব এর রিঅ্যাকশন কি হবে ভেবে রেখেছিস ?
- ধুর বাল , বাদ দে না , তুই অলটাইম নেগেটিভ ভাবিস । কিচ্ছু হবে না । আর কিছু হলে সেটা পরে দেখা যাবে ।
- দোস্ত আমার দোস্ত আমার যাতে হবে , ৯ টা বেজে গেছে একটু পর মীরাক্কেল শুরু হবে । অপূর্ব রায়ের ভাব টা দেখেছিস , জোসস লাগে আমার কাছে । শেষ দিকে নীতিকথাগুলো যা বলে না সত্যি অনুসরণীয়
- ওকে কাল দেখা হবে গুড নাইট
- গুড নাইট


নাহ আর লিখতে পারছি না । বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে খুব বেশি লেখা যায় না । উপরের লেখাগুলো পুরোটাই মিথ্যে । আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশের ৯৫ ভাগ মানুষই সুস্থ প্রতিবাদ করতে জানে । উপরের ঘটনাটা বাকি ৫ ভাগ । প্রতিনিয়ত ইন্ডিয়ান পণ্যের সাথে বসবাসের মাধ্যমে ইন্ডিয়ান পণ্য বর্জন করার কিছু কৌতুক পরিবেশন করে মাত্র । এটা ঠিক ইন্ডিয়ান পণ্য আমাদের জীবনে খুব আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে আছে । চাইলেই তা ত্যাগ করা যায় না । কিন্তু ধীরে ধীরে ঠিকই ত্যাগ করা সম্ভব । তাই আসুন একবারে না হলেও ধীরে ধীরে নিজেদের স্বনির্ভর করে গড়ে তুলি । অন্তত একটা পণ্য বর্জন করে হলেও ইন্ডিয়ার আগ্রাসনে ধাক্কা দেই


বিঃদ্রঃ এটি আমার অনুর্বর মস্তিষ্কের কল্পনাপ্রসূত লেখা , মানুষের বাস্তব জীবনের সাথে মিলিয়ে নিজের উর্বর মস্তিষ্ককে অনুর্বর হিসেবে প্রমাণ করিবেন না

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | coupon codes