লেবেল

নিজেকে এখনও গুছিয়ে নিতে পারিনি

২৭ জানুয়ারী, ২০১২

অবশেষে বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন , এইডা কিছু অইল ??

বাণিজ্য মেলায় গেছিলাম আইজকা । নিচের ছবি দেইখা আমি পুরাই টাশকিত
"
"
"
"
"
"
"
"


এইটা বাণিজ্য মেলার বঙ্গবন্ধু স্টলের ব্যানার । লেখা আছে

ইন বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আউট

একটু ঘুরিয়ে চিন্তা করেন বঙ্গবন্ধু ইন , বাংলাদেশ আউট

এইডা কিছু অইল

যেভাবে নাম পরিবর্তনের খেলা চলতেছে সেইদিন আর দূরে না যেদিন এই পোস্ট সত্যি হইয়া যাইব

একটা ফান পুস্ট মাত্র , সিরিয়াসলি নিয়া নিজের চুলকানী বাড়ায়েন না পিলিজ

সোহানের ভারতীয় পণ্য বর্জনের স্বপ্ন এবং বাস্তবতা

রাত আটটার বাংলা সংবাদে একটা নিউজ দেখে চমকে উঠল সোহান । সীমান্তে বিএসএফ এক বাংলাদেশী উলংগ করে পিটিয়েছে । কি নৃসংশ । দেখে আতঁকে উঠল সে । এর আগে ফেলানী এবার হাবু শেখ । এভাবে মেনে নেয়া যায় না । এবার কিছু একটা করা দরকার । করতেই হবে । কিছুক্ষণ ভেবে নিজের মাইক্রোম্যাক্স মোবাইলটা হাতে তুলে নিল সোহান । নিজের এয়ারটেল নাম্বার থেকে রাজিব কে ডায়াল করল 0167181**** । রিং হচ্ছে ওয়ান্না বি মাই ছাম্মাক ছাল্লো , নিজের অজান্তেই দুলে উঠল সোহানের শরীর ।

- হ্যালো দোস্ত বল
- নিউজটা দেখেছিস বিএসএফের নির্যাতনের টা ?
- হ্যা দেখলাম , কি নৃসংশ
- আর তো চুপ করে থাকা যায় না , এবার কিছু একটা করা দরকার ।
- কি করতে চাস বল , তোর প্ল্যান কি ? আপাতত যা পারি সেটা হল ভারতীয় পণ্য বর্জন করা । ভারত আমাদের বাজারের অনেকটাই দখল করে আছে । সো পণ্য বর্জন করলে ভারত অনেকটা ধাক্কা খাবে ।
- ওকে চল কাল ফ্রেন্ডসদের সবাইকে ব্যাপারটা ইনফর্ম করি ।
-ওকে কাল সকাল ১০ টায় রবীন্দ্র সরোবরের চলে আসিস ।
- ওকে বাই

ডিনারটা সেরে এসে তড়িঘড়ি করে নিজের ল্যাপটপটা ওপেন করে বসল সোহান । এয়ারটেলের নেট কানেকশন টা লাগিয়ে প্রথমেই ফেছবুকে ঢুকে একটা জ্বালাময়ী ভারত বিরোধী স্ট্যাটাস দিয়ে দিল । আরেকটা গ্রুপ খুলল "আসুন ভারতীয় পণ্য বর্জন করি" গ্রুপে এড করে ফেলল নিজের ফ্রেন্ডলিস্টের সকল বন্ধুকে । সেই সাথে কোলকাতার বন্ধু অমিত কেও ।

হঠাৎ মনে হল সামুর সকল ব্লগারকে একসাথে করা দরকার । ব্লগাররা অনেক ভালো । তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায় ভালো । কানে হেডফোন লাগিয়ে লিখতে বসে গেল সোহান । বাজছে গার্লফ্রেন্ডের অতিপ্রিয় গান "তেরি মেরি মেরি তেরি প্রেমকাহানী হে মুশকিল" । আধঘন্টার চেষ্টায় মুটামুটি ভালোই একটা লেখা দাঁড়িয়ে গেল । পোস্টের করার ১৫ মিনিটেই সমর্থন জানিয়ে ৩৫ কমেন্ট । পোস্ট হিট ।

রাত বাজে প্রায় সাড়ে ১২ টা । কাল রাতে রনবীর কাপুরের ""রকস্টার"" মুভিটা নামিয়েছে সোহান । দেখতে বসে গেল....

ঘুম ভাঙল একটু দেরিতেই । আম্মু ডাকছেন , নাস্তা করার জন্য । তড়িঘড়ি রেডি হয়ে টেবিলে বসে গেল সোহান । স্লাইস রুটিতে জেলি মাখানোই আছে । একটা রুটি নিয়ে গোগ্রাসে গিলতে শুরু করল । পানি টা মুখে দিয়েই দৌড় । পেছন থেকে মার চিৎকার সোনা গেল , সোহান কমপ্ল্যানটা খেয়ে যা বেটা । এই মুহূর্তে মার কথা শোনার মত টাইম নেই সোহানের । নিজের টিভিএস বাইকটা স্টার্ট করেই রবীন্দ্র সরোবর অভিমুখে চলল সোহান

জ্যামের কারণে ২০ মিনিট লেট । রাজিব আগেই এসে বসে আছে তার হাঙ্ক বাইকের উপর । আহ রাজিব বাইকটা যা কিনছে না , জোসস হইছে ভাবল সোহান

-কিরে কি অবস্থা , কখন এলি ?
- এইতো ২০ মিনিট
- গুড , আর সবাই কই ?
- আসতেছে ।
রুমেলের একটু লেট হবে , ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার থেকে ওর গার্লফ্রেন্ডকে সাথে করে নিয়ে আসবে । সো লেট
- আর বাকিরা ?
- বড়জোর দশ মিনিট লাগবে ওদের
- ওকে
- চল ওয়েট করতে করতে চা বিড়ি খাই
- হুম , চল

গাইস কাল রাতের নিউজটা তো সবাই দেখছিস নাকি । কেমন নির্মম আর নৃসংশ কল্পনা করা যায় না । এর প্রতিবাদ করা দরকার । আর কত নির্যাতন সহ্য করব বল । সবদিক থেকেই ভারত আমাদের শোষণ করছে । প্রথমে ফারাক্কা , এরপর টিপাইমুখ । পর্যাপ্ত পানি দিচ্ছে না তিস্তায় । ট্রানজিটের নামে গলা টিপে ধরেছে তিতাসের । এভাব আর কত বল । কিছু একটা করবোই এবার ।

- রনিঃ কি করতে চাস বল ?
- আমাদের প্রথম কাজ হল ভারতীয় পণ্য বর্জন করা । এরপর সুযোগ মতন ইন্ডিয়ান দূতাসের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করা । এছাড়া আর কি করব বল ।
- যাই হোক ফেচবুকে প্রচারণা চালানোর জন্য গ্রুপ খুলছি । পোস্ট দিতে শুরু করবি ইন্ডিয়া বিরোধী নিয়ে । আর আমি ব্লগারদের সংগঠিত করার ট্রাই করতেছি । যাই হোক আজ সন্ধ্যার পর শাহবাগ আসিস । পোস্টার করব কিছু
- ওকে
- ওকে

বাই দ্য ওয়ে খেলা দেখছিস আজ ? ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়ার ?
-রাজিব-হুম
- আর বলিস না, এত্ত আশা নিয়ে খেলা দেখতে বসি , খেলা শেষে আশাহত । চিন্তা কর ট্যুরে যাওয়ার আগে কত্ত কথা ইন্ডিয়া হেন করবে , তেন করবে । আর কখন , বাঁশের উপরে আছে ।
- আমি নিজেও এইবার ইন্ডিয়ারে নিয়া আশাবাদী ছিলাম । অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা যা তা , সেখানে ইন্ডিয়ার বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপ । অথচ এই ব্যাটিংটাই অস্ট্রেলিয়ার নাদান বোলারদের কাছে কেমনে ভেঙে পড়ল । না দ্রাবিড় না লক্ষণ না শেবাগ । হাহ
- তবে যত যাই বলিস টেন্ডুলাকার কিন্তু মুটামুটি ঠিকই আছে । এরেই বলে জাত ব্যাটসম্যান । সর্বকালের সেরা কি আর এমনিই বলে নাকি

মা আব্বু কোথায় ?
- ইন্ডিয়ান এম্বাসিতে গেছে , তোর চাচার ভিসাটা আজ ফাইনাল হতে পারে ।
- চাচ্চু মাদ্রাজ যাচ্ছে কবে ?
- ভিসা টা হয়ে গেলেই কয়েকদিনের মধ্যে যাবে
- এবারই কি শেষ নাকি আরও যেতে হবে ?
- ডক্টর তো বলেছিল এবারই শেষ , দেখা যাক কি হয়
- কে কে যাচ্ছে সাথে ?
- তোর চাচী , আর তোর সোহাগ ভাইয়া
- ও
- মা , আমরা আগ্রা যাচ্ছি কবে ?
- তোর আব্বুর ব্যস্ততা টা কমুক এরপর
- মা তোমার মনে আছে আমি যখন দার্জিলিং পড়তাম , প্যারেন্টস ডে তে তোমরা যেতে । আমরা ঘুরতে যেতাম । কত্ত মজাই না হত । ইশ স্কুলের বন্ধুদের খুব মিস করি এখন
- হুম মনে আছে , এখন খেয়ে নে , আমি ঘুমাবো


কিরে রনি আসল না ?
- জ্যামে আছে , বেশিক্ষণ লাগবে না মনে হয়
- পোস্টার দিয়ে কি করবি ?
- মানববন্ধনে লাগতে পারে , তাই আগে ভাগেই বানিয়ে রাখলাম
- হুম
রুমেল তোর নতুন বাইক কবে আসছে ?
- আরে পেমেন্ট তো দিয়ে রাখছি , কিন্তু আজ না কাল এভাবে সময় নিচ্ছে ।
- আর এই পালসারটা কি করবি ?
- চাচাতো ভাইয়ের সাথে ডিল হয়ে আছে , আমার টা এসে গেলে ও এটা নিয়ে নেবে
- কত কমে ছাড়ছিস ?
- ৫০ হাজার
- আরে শালা , ভালো লাভই করলি । এটাও তো অনেকদিন হল । প্রায় একবছর । তাও মাত্র ৫০ কমে ছাড়তেছিস । দারূণ

রুমেল: আচ্ছা আমরা যে প্রতিবাদ করব এর রিঅ্যাকশন কি হবে ভেবে রেখেছিস ?
- ধুর বাল , বাদ দে না , তুই অলটাইম নেগেটিভ ভাবিস । কিচ্ছু হবে না । আর কিছু হলে সেটা পরে দেখা যাবে ।
- দোস্ত আমার দোস্ত আমার যাতে হবে , ৯ টা বেজে গেছে একটু পর মীরাক্কেল শুরু হবে । অপূর্ব রায়ের ভাব টা দেখেছিস , জোসস লাগে আমার কাছে । শেষ দিকে নীতিকথাগুলো যা বলে না সত্যি অনুসরণীয়
- ওকে কাল দেখা হবে গুড নাইট
- গুড নাইট


নাহ আর লিখতে পারছি না । বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে খুব বেশি লেখা যায় না । উপরের লেখাগুলো পুরোটাই মিথ্যে । আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশের ৯৫ ভাগ মানুষই সুস্থ প্রতিবাদ করতে জানে । উপরের ঘটনাটা বাকি ৫ ভাগ । প্রতিনিয়ত ইন্ডিয়ান পণ্যের সাথে বসবাসের মাধ্যমে ইন্ডিয়ান পণ্য বর্জন করার কিছু কৌতুক পরিবেশন করে মাত্র । এটা ঠিক ইন্ডিয়ান পণ্য আমাদের জীবনে খুব আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে আছে । চাইলেই তা ত্যাগ করা যায় না । কিন্তু ধীরে ধীরে ঠিকই ত্যাগ করা সম্ভব । তাই আসুন একবারে না হলেও ধীরে ধীরে নিজেদের স্বনির্ভর করে গড়ে তুলি । অন্তত একটা পণ্য বর্জন করে হলেও ইন্ডিয়ার আগ্রাসনে ধাক্কা দেই


বিঃদ্রঃ এটি আমার অনুর্বর মস্তিষ্কের কল্পনাপ্রসূত লেখা , মানুষের বাস্তব জীবনের সাথে মিলিয়ে নিজের উর্বর মস্তিষ্ককে অনুর্বর হিসেবে প্রমাণ করিবেন না

১৬ জানুয়ারী, ২০১২

বাংলা সিনেমার অবিস্মরণীয় ডায়লগুলোর সংকলনঃ চৌধুরী সাহেব টাকা দিয়ে ভালবাসা কেনা যায় না

ছোটবেলায় বিটিভিতে প্রতি শুক্রবার বিকেল ৩.১৫ মিনিটে পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি দেখেনি এমন মানুষ কমই আছে । আসলে তখন তো বিটিভি ছাড়া আর কোন চ্যানেল ছিল না তাই বাধ্য হয়েই দেখতে হত । মনে আছে পরিবারের সবাই মিলে একসাথে মুড়ি মাখিয়ে বাংলা সিনেমা দেখার মজাই ছিল আলাদা । সেই সিনেমাগুলো দেখতাম আর ডায়লগগুলো মুখস্ত করতাম । পরদিন স্কুলে গিয়ে আমরা বন্ধুরা ডায়লগগুলা নিয়া অনেক হাসাহাসি করতাম । বলতে দ্বিধা নেই বাংলা সিনেমা ছিল তখন এক পারফেক্ট বিনোদন ।

এই পোস্টে আমি সিনেমার সেই বিখ্যাত ডায়লগগুলো এক করার চেষ্টা করেছি । মাঝে মাঝে দেখব আর হাসাহাসি করব তো তাই । আমি পরিচিত কয়েকটা ডায়লগ দিলাম । আপনাদের ভান্ডারে কিছু থাকলে দিন এড করে নেব । চাইলে ঘুরিয়ে পেচিয়ে আপনি নিজেও ডায়লগ বানিয়ে দিতে পারেন , দেখবেন সেইটাই হিট

বলেন তো বাংলা সিনেমার সবচেয়ে বিখ্যাত ডায়লগ কোনটা ?? আসুন সেটা দিয়েই শুরু করি....

# চৌধুরী সাহেব মনে রাখবেন টাকা দিয়ে ভালবাসা কেনা যায় না ।(তয় গুড হাউস কেনা যায়))

# বাবা থাক তুমি তোমার টাকার পাহাড় নিয়ে , আমি চললাম কাল্লুর সাথে

# কি তোর এত বড় স্পর্ধা , সামান্য একটা স্কুল মাস্টারের ছেলে হয়ে আমার মেয়ের সাথে প্রেম করিস

# এই যে মিস্টার আপনি জানেন আমি কে ?? (জানলে কি আর ছাড়ুম নাকি

# কি বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ দেব , আজ আপনি না থাকলে কি যে হত ?? (কি আর হত গুন্ডাদের হাতে ইজ্জত ভাগাভাগি হত)

# মা মা আমি পাশ করেছি , মা আমি চাকরি করব , আমাদের আর কোন দুঃখ কষ্ট থাকবে না মা । মা বলবেন ইয়া আল্লাহ তোমার দরবারে লাখ লাখ শোকর

# ছেড়ে দে শয়তান , তোর ঘরে কি মা বোন নেই !!

# শয়তান তুই আমার বাবাকে মেরেছিস , আমাকে পিতৃহারা করেছিস , আমার আমাকে বিধবা করেছিস , ইয়া ঢিসুম্মম

# শয়তান ফিরিয়ে দে আমার হারিয়ে যাওয়া ২০ টি বছর , ফিরিয়ে দে আমার হারিয়ে যাওয়া ছোট ভাইকে

# খোকা এই তোর বাবার খুনিইইই , প্রতিশোধ নে

এবার আপনাদের পালা । ডায়লগ দিতে থাকুন

* অথৈ সাগরঃ মা মা আমি ফাস কেলাস ফাস হয়েছি

* শিপু ভাই বলেছেন:
হাউ ডেয়ার ইউ!!! তোমার এত বড় সাহস!!!


* অথৈ সাগর বলেছেন: নায়িকা-- শয়তান তুই আমার দেহ পাবি মন পাবি না লুল -- তাতেই আমার চলবে

* sumon3d বলেছেন:
নায়িকা: ছেড়ে দে শয়তান।তুই আমার দেহ পাবি তো মন পাবি না। ভিলেন : ওটাই তো চাই সুন্দরী।


* লিন্‌কিন পার্ক বলেছেন: আপনাকে কোথায় যেন দেখেছি

* ছাইরাছ হেলাল বলেছেন:

আপনি অনেক মজার


* বেঈমান আমি বলেছেন: সেই সুযোগ তুই পাবি না শয়তান

১১ জানুয়ারী, ২০১২

গোলাম আজম কারাগারে !!! একি শুনি আজ

গোলাম আযম গ্রেফতার । এই সরকারের উপর আর ভরসা করতে পারছি না । কি বিচার করবে জানা আছে আমার । হাহ
"
"
"
"
"
"
"
"
"

কিসের বিচার ?? কার বিচার ?? কোন বিচার মানি না । আইজকা গো আ রে ডিম থেরাপি দিয়া , কয়েকদিনের মধ্যেই সবকয়টাকে(কুত্তার বাচ্চা কইতে চাইছিলাম , কিন্তু তাতে কুত্তারই অসম্মান হয়) ফাঁসি তে ঝুলানো চায় ।

৭১ এ যারা বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করছে , দেশমাতাকে ধর্ষণ করছে তাদের জন্য কোন মানবতা নেই কোন বিচার নেই । শুধুই ফাঁসি চাই


সবশেষে এই গো আ রে জুতা পেটা করার এই ছবি


আজ এই খুশির দিনে নিজেকে দাবায়া রাখতে পারলাম না । ঘরে ঘরে আজ খুশির জোয়ার । আনন্দ ভাগ করে নিতে পোস্টটা লিখে ফেললাম

৯ জানুয়ারী, ২০১২

প্রসংগ ভারতীয় সিনেমা এবং আমাদের সিনেমা

বাংলাদেশের মিডিয়া জগতে এখন যে খবরটি একটু বেশি প্রচারিত বা গরম সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে "ভারতীয় সিনেমা" মুক্তি পাওয়া । এক পক্ষের জোর দাবি ভারতীয় সিনেমা মুক্তি দিয়ে সিনেমা হলকে বাচানো(এই পক্ষ হল সিনেমা হল মালিক সমতি) আরেক পক্ষের দাবি হল এতে দেশীয় সিনেমা শিল্প হুমকির মুখে পড়বে(এই পক্ষ সিনেমা তৈরি করা থেকে বিতরণকারী , সর্বোপরী পরিচালক প্রযোজক বৃন্দ) । দুই পক্ষেরই জোড়ালো যুক্তি রয়েছে । অবস্থা এমন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি

আমি চাই না বাংলাদেশে ভারতীয় সিনেমা আসুক । কিন্তু এলে কি হবে ? সবার ধারণা এতে ভারতীয় সিনেমার কাছে দেশীয় সিনেমা মার খাবে সোজা বাংলায় বাংলা সিনেমা শেষ । আমি বুঝিনা প্রতিযোগিতাকে আমরা কেন এত ভয় পাই ? প্রতিযোগিতা ছাড়া কোন কিছুরই উন্নয়ন সম্ভব না । কেন ভারতীয় সিনেমা কি প্রতিযোগিতা করে না ? আমার তো মনে হয় বিশ্বের ত্বাবত সিনেমার চেয়ে ভারতীয় সিনেমাই বেশি প্রতিযোগিতা করে । ভারতীয় সিনেমা মানে তো শুধু বলিউডের হিন্দী সিনেমাই না । আছে তামিল , তেলেগু , বাংলা , পাঞ্জাবী , ভোজপুরী সহ আরও অনেক সিনেমা । আর এই সিনেমাগুলো কিন্তু একই সাথে সারা ভারতে প্রতিযোগিতা করছে এবং কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছে । শুধু তাই না হিন্দিতে ডাবিং করে এখন হলিউডের মুভিগুলোও ভারতে মুক্তি পাচ্ছে এবং খুব ভাল ব্যবসা করছে । শুধু যদি ভারতীয়রা হিন্দি সিনেমাই দেখত তাহলে তো অন্য ভাষার সিনেমার কোন ইন্ডাস্ট্রিই থাকতো না । কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে ভারতীয়রা হিন্দি সিনেমার চেয়ে নিজ ভাষার সিনেমাই বেশি দেখছে । তামিল তেলেগু বা কলকাতায় এখন বেশিরভাগ সিনেমার বাজেটই থাকে ১০ থেকে ১৫ কোটি রূপি । এবং এই সিনেমাগুলো লগ্নিকৃত অর্থ নিজেদের মার্কেট থেকে ঠিকই তুলে আনছে । দক্ষিণে একই শাহরুখের মুভি আর নাগার্জুনার মুভি মুক্তি পেলে সেখানকার মানুষ নাগার্জুনার মুভিই বেশি পছন্দ করছে । শুধু মাত্র হিন্দি সিনেমার জন্য অন্য কোন ভাষার ইন্ডাস্ট্রি বসে যায় নি । কারণ মানুষ সবসময়ই নিজের ভাষার সিনেমা দেখতে পছন্দ করে, যদি তাদেরকে তেমন সিনেমা তৈরি করে দেয়া যায় । কিন্তু আমরা সেটা পারছি কই ?

এখন সিনেমা হল মালিকদের কথা হচ্ছে যেহেতু আমাদের দেশে ভাল সিনেমা হচ্ছে না(কথাটা অবশ্যই ৯৮% সত্য) সেহেতু সিনেমা হলগুলো টিকিয়ে রাখতে ভারতীয় সিনেমার বিকল্প নেই(অলস মস্তিষ্কের বস্তা পঁচা চিন্তা কারে কয়) । এরা ভুলে গেছে বর্তমানে বাংলা সিনেমার দর্শক কারা ? গার্মেন্টস শ্রমকেরা যাদের অন্য কোন বিনোদন মাধ্যম নেই বলেই সিনেমা দেখে । তাদের কাছে এখনও শাহরুখ খানের চেয়ে শাকিব খানের গ্রহণ যোগ্যতা বেশি । তো তারা কি শাকিব খানের হিরো গিরি বাদ দিয়া শাহরুখ খানের রোমান্টিক সিন দেখতে যাবে নাকি । আরেকটা কথা আজ হয়ত পুরনো সিনেমা মুক্তি দেয়া হচ্ছে , কিন্তু কাল যদি হল মালিকেরা ভারতের সিনেমা ভারতের সাথে একই সাথে এদেশে মুক্তি দিতে দেয়ার ব্যবস্থা করে তখন সিই সিনেমার টিকেট মূল্য অবশ্যই অনেক বেশি হবে যা কিনা এই দর্শকদের নেই । আর সিনেমা হলগুলোর যে অবস্থা তাতে মনে হয় না ভদ্র ফ্যামিলির কেউই ওই সিনেমা দেখতে হলে যাবে । সিনাম হলের নাম শুনলেই তো মানুষ নাক সিটকায় । সেই হিসেবে হল মালিকেরা নিজেদের ব্যার্থতার দায় এড়াতে পারেন না

অন্যদিকে পরিচালকদের , প্রযোজকদের কথা হচ্ছে ভারতীয় সিনেমা মুক্তি পেলে কেউই আর এদেশের সিনেমা দেখতে চাইবে না । সো আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস । আমার কথা হচ্ছে কেন আপনারা ভয় পান ? আপনাদের কি নিজেদের সামর্থ্যের উপরই কোন বিশ্বাস নেই ? নাকি নিজেদের মাথার(ডাস্টবিনও বলা যায়) সব আবর্জনা দর্শকদের কাছে ফাঁস হয়ে যাবে ? আমাদের পরিচালকেরা শুধু নাম সর্বস্ব আন্দোলন করতেই পারদর্শী । অন্য কাজে ঠনঠনা । সব পরিচালকদেরই দেখা আছে , দেখা আছে তাদের সিনেমা । বাংলাদেশের অনেক নামী দামীই নাম সর্বস্ব পরিচালকই ভারতীয় সিনেমা আগ পিছ করে সিনেমা বানান । গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও আমজাদ হোসেনও এর ব্যাতিক্রম না । তাহলে সেই সিনেমা মানুষ কেন দেখতে যাবে ?

একটা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি উন্নতির জন্য কি ৪০ বছর যথেষ্ট সময় নয় ?? আর কত সময় দরকার আমি জানি না । ৪০ বছরে আপনারা কি দিতে পেরেছেন ? শুধু কপি পেস্ট করা সিনেমা ছাড়া । ১৫ দিনে বানানো(রেকর্ডটা মনতাজুর রহমান আকবরের দখলে) একটা সিনেমায় আমরা পাব ? একটা সিনেমা তাড়াহুড়া করে শুধু বানিয়ে মুক্তি দিলেই হয়ে গেল না । শুধু পোস্টার ছাপানো ছাড়া নেই সিনেমার কোন প্রচার , নেই সিনেমা হিট করার কোন সুদূরপ্রসারী চিন্তা । সিনেমা তাহলে আমাদের কাছে পৌছাবে কি করে ।

একসময় আশ্লীলতা সিনেমাকে গ্রাস করেছিল । তা এই অশ্লীল সিনেমা কারা বানাতো ? এফডিসির পরিচালকেরাই তো তাই না ? অভিনয় শিল্পী কারা ছিল এফডিসির শিল্পীরাই তো তাই না ?? কেন সেই শিল্পীরা পারেনি অশ্লীল মুভি বর্জন করতে ? আজকের সাকিব খান সেই সময়ের একজন নামিদামী অশ্লীল শিল্পী ছিলেন । শাকিব খান ময়ূরী জুটি ছিল সেই অশ্লীল সিনেমার হিট জুটি । কেন তিনি তখন সেটা বর্জন করতে পারেন নি ? আমাদের একটা সিনেমার বাজেট যেখানে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা সেখানে খান সাহেব পারিশ্রমিক হিসেবে নেন ৫০ লাখ টাকার উপরে । বাকি টাকা দিয়ে কেমন মুভি বানানো যাবে তা বোঝাই যায় । কেন শাকিব খান কি পারেন না সিনেমার স্বার্থে নিজের পারিশ্রমিক কমাতে । তাহলে আমি কিভাবে বলব সিনেমার এই মানুষগুলো সত্যি সিনেমার প্রতি ডেডিকেটেড !!


অশ্লীলতার যুগে বাংলা সিনেমার একটি পোস্টার


আমি অবশ্যই সিনেমা হলে গিয়ে বাংলাদেশে নির্মিত সিনেমা দেখতে চাই । কিন্তু কষ্টকর হলেও সত্যি অধিকাংশ সিনেমা এমনই যে সেগুলো দেখতেও রুচিতে কিছুটা আঘাত লাগতে বাধ্য । উদ্ভট সাজ সজ্জা আর গল্পের সিনেমা আমি কেন দেখতে যাব ? একই গল্প বার বার দেখতে কেন যাব ? নকল করে সোজা কথায় কপি পেস্ট করা সিনেমা দেখতে কেন যাব ? হ্যা অবশ্যই বলিউডের মুভি কপি হয় কিন্তু আমাদের এখানে তো কেউ খুব ভাল মত কপি করার মতও পরিচালক নেই । কেন অন্য দেশের সিনেমা কপি না করে শুধু ভারতীয় সিনেমাই কপি করা হয় ? এর মানে কি এই যে আমাদের পরিচালকেরা শুধু হিন্দি সিনেমাই দেখেন । যে সিনেমা হলিউড থেকে কপি করে বলিউডে বানানো হয় তারও অনেক পরে বাংলাদেশে কপি করা হয় । যেমনঃ মাই বেস্ট ফ্রেন্ডস ওয়েডিং >> মেরে ইয়ার কি শাদি হ্যায় >> শুভ বিবাহ(দেবাশিষ বিশ্বাস) । কেন সরাসরি হলিউডি মুভি কপি করতে পারেন না ? এর জন্যই আমার মনে হয় আমাদের পরিচালকেরা আসলেই মেধাশুন্য( ব্যতিক্রমও আছেন তবে সংখ্যায় খুবই কম , সবাই তো আর জহির রায়হান , আলমগীর কবির বা তারেক মাসুদ নন) । পরিচালক কতটা মেধাশুন্য হলে এমন সিনেমা বানাতে পারে নিচের ভিডিওটিই তার প্রমাণ

শাকিব খান বুয়েটের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার

আমি পকেটের টাকা খরচ করে কার সিনেমা দেখতে যাব ?


এর ?


না এর ??

শাবনূর , অপু বিশ্বাস ? এর চেয়ে চিড়িয়াখানায় গিয়ে হাতি দেখলেও পয়সা উসুল । সত্যি করেই বলছি শাবনূর বা অপু বিশ্বাসের স্থূল শরীর দেখার চেয়ে আমার কাছে ক্যাটরিনার চিকনি চামেলীই বেশি ভাল লাগে

সবশেষে একটা সত্য ঘটনা অবলম্বনে জোকসঃ

গত বছর ঈদে মুক্তি পাওয়া শাকিব খানের একটি সিনেমার বক্স অফিস খবরাখবর জানতে এক সাংবাদিক গেছেন রাজমনী সিনেমা হলে । হলের ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করলেন দর্শক কেমন ? ম্যানেজারের উত্তর "আসলে আমাদের বেশির ভাগ দর্শকই হচ্ছে গার্মেন্টস কর্মীরা , আর ঈদের ছুটিতে তারা ঢাকার বাইরে আছে , আশা করি তারা ঢাকায় ফিরলেই সিনেমটা হিট করবে"

হা হা হা

পুরো পোস্টে একটা জিনিসই প্রমাণিত হয় "ব্যাথা সারা গায় , ঔষুধ দেব কোথায়" হা হা হা

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | coupon codes