লেবেল

নিজেকে এখনও গুছিয়ে নিতে পারিনি

২৭ এপ্রিল, ২০১১

বইপড়ার অভিজ্ঞতা..!!

ছোট বেলায় পড়েছিলাম বই কিনে নাকি কেউ দেওলিয়া হয় না । বর্তমান যুগে এই কথাটা কতটা যুক্তিসঙ্গত তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে । কিন্তু এটা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই যে বই পড়ে কেউ দেওলিয়া হয় না । আমি বিশ্বাস করি একমাত্র বই পড়লেই প্রাচুর্য লাভ করা যায় । জ্ঞানের প্রাচুর্য । যা কখনও কমেনা , বরং বেড়েই যায় । কারণ বইই একমাত্র মাধ্যম যেখানে সঞ্চিত আছে হাজারো মানুষের অর্জিত জ্ঞান । আর সেই বই পড়া মানেই তার অর্জিত জ্ঞান নিজের মধ্যেও নিয়ে নেওয়া । শতাব্দী প্রাচীনকাল থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে কাগজ থেকে বই আজ ইবুকে রূপ নিয়েছে ।


খুব ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ের বাইরে আর কোন বই পড়তাম না । ছোটবেলার সেই ধারাপাত বই পড়তেই অনেক কষ্ট হত আর ভাবতাম কখন পড়া শেষ করে খেলতে যাব । ছোটবেলায় ঠাকুমার ঝুলিতে ঝোলেনি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে । ছেলে বুড়ো সকলের কাছে এখন পর্যন্ত সমান জনপ্রিয় ঠাকুমার ঝুলি । আমার মনে হয় বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে বেশিবার পঠিত বই ঠাকুমার ঝুলি । রাক্ষোস ক্ষোকসের সাথে রাজকন্যা আর রাজপুত্রের প্যাচগোচ বুঝতে বুঝতে ঘুমাতে হত তখন । ঠাকুমার ঝুলি মানুষ নাকি দাদী নানীর কাছেই প্রথম শুনে থাকে । কিন্তু সত্যি বলতে কি আমি প্রথম গল্প শুনি আমার বড় আপুর কাছে । ঠাকুমার সাথে আপু প্রাইজ হিসেবে পাওয়া বিভিন্ন দেশের রূপকথার গল্প বইটাও পড়ে শোনাত । আমার পেছনে আমার বড় আপুর অবদান কখনই ভুলতে পারব না ।


যাই হোক এরপর কিছুটা বড় হয়ে কমিকস পড়া শুরু করলাম । ক্লাশ থ্রিতে পড়ার সময় হাতে এল প্রাণের কমিকস..!! প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে কমিকস কিনতাম । আম্মুর সাথে আমার ডিলই ছিল প্রতিদিন আমাকে কমিকস কিনে দেয়া । আর সেই সব বই বন্ধুরা শেয়ার করতাম । চাচা চৌধুরী , বিল্লু , পিঙ্কি , রমণ , ডায়নামাইট , ফ্যান্টম , লম্বু মোটু , প্রাণের সব বইই পড়াতাম । তবে এর মধ্যেও সবচেয়ে প্রিয় ছিল অবশ্যই চাচা চৌধুরী । সাবু আর কুকুর রকেটকে নিয়ে চাচা চৌধুরীর সেই কাহিনীগুলা আজও ভুলতে পারিনি । আর ভুলতে পারিনি ব্যাক ডায়ালগ...চাচা চৌধুরীর বুদ্ধি কম্পিউটারের চেয়ে প্রখর...!!!


আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলাম । কিন্তু বই পড়ার দিক থেকে আর বড় হতে পারছিনা । ছোট গল্প আর কমিকসের বাইরে অন্য কিছুই ভাল লাগেনা । ততদিনে আপুরা দেখতাম মাঝারি সাইজের কিছুটা মোটা তিন গোয়েন্দা নামে কি বই যেন পড়ত । অনেক চেষ্টা করেছি । কিন্তু ভাল লাগাতে পারিনি । আমার বন্ধুরাও ততদিনে তিন গোয়েন্দা পড়া শুরু করে দিয়েছে । কিন্তু আমি পড়তেই পারছিনা । কষ্ট লাগে এত বড় বই পড়তে..!!! ওই সময়ে বিমান দূর্ঘটনা বইটা যে কতবার শুরু করেছি তার ইয়াত্তা নেই । কিন্তু শেষ করতে পারিনি । অবশেষে ক্লাশ সেভেনে আমার বন্ধু রিফাত আমাকে এক রকম জোর করেই একটা তিন গোয়েন্দা বই পড়তে দিল । অনেক অনুরোধ করে বলল শুধু একটা বই যেন আমি পড়ি । এরপর ভাল না লাগলে আর পড়ার দরকার নেই । আমার এখনও মনে আছে রিফাতের দেয়া আমার পড়া তিন গোয়েন্দার প্রথম বইটির কথা । বইটি ছিল জলদস্যুর মোহর নামে একটা বই । ওই বইতে তিন গোয়েন্দার চিরশুত্রু শুঁটকি টেরিও ছিল । স্কুল থেকে এসে ড্রেস চেঞ্জ না করেই বিছানায় শুয়ে পড়া শুরু করেছিলাম বইটি । আমার এখনও মনে আছে সারাদিন লেগেছিল বইটা শেষ করতে । বইটা শেষ করে মনে হয়েছিল আমি যেন অন্য কোন জগতে চলে গিয়েছি । ওই বয়সে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় প্রতিটি কিশোর কিশোরীর কাছে তিন গোয়েন্দা ছিল রীতিমত হিরো । সবাই আচ্ছন্ন ছিল তিন গোয়েন্দার লাইফের প্রতি । আমিও তার ব্যাতিক্রম ছিলাম না । বাংলাদেশে তিন গোয়েন্দা পড়েনি এমন শিক্ষিত কিশোর কিশোরী মনে হয় কমই আছে । আমার মনে হয় তিন গোয়েন্দা পড়ার পর থেকেই আমি কিছুটা আধুনিক হয়েছি, বাইরের দুনিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছি । তাই তিন গোয়েন্দার কাছে আমি আজীবন ঋণী হয়ে রইলাম ।


এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়ার আগ পর্যন্ত শুধু তিন গোয়েন্দাই পড়েছি । এর বাইরে সেবার কিছু অনুবাদ আর ওয়েস্টার্ণ পড়েছি । তবে তিন গোয়েন্দার মত আর কিছুই আমাকে টানতে পারেনি । অনেকেই তখন মাসুদ রানা পড়ত । কিন্তু মাসুদ রানা আমাকে কখনও টানতে পারেনি । কারণটা আমি নিজেও জানিনা । তখন পর্যন্ত যে কোন ধরণের উপন্যাস আমার জন্য নিষিদ্ধ ছিল । কিন্তু আমি ওই সময় ফুপির বাসায় গিয়ে তসলিমা নাসরিনের নিষিদ্ধ উতল হাওয়া বইটি লুকিয়ে পড়ে ফেলেছিলাম..!! হা হা হা । যদিও আইনটা আমার ছোট বোনের ক্ষেত্রে ছিল না । ও ক্লাশ সেভেন থেকেই হুমায়ূন, মিলন পড়ত । দুইজনের জন্য কেন দুইটি ভিন্ন আইন বলবৎ ছিল আমি জানিনা । বড় আপু ছিল এই আইনের প্রবক্তা । তবে অবশ্য পাঠ্যের তালিকায় হাজার বছর ধরে ছিল বলে ওই কার্ফিউর সময় উপন্যাসটা পড়েছিলাম । আমার সর্বাধিক পঠিত বইয়ের তালিকায় হাজার বছর ধরে বইটি বেশ উপরের দিকেই থাকবে । মন্তু আর টুনির কৈশোরিক প্রেম কাহিনী সেই কিশোর বয়সে আমার মনে অনেক দোলা দিয়েছিল..!!


কলেজে উঠেই আমার যে কথা প্রথম মনে হয়েছে সেটা হল আমি এখন অনেক বড় । তাই সবকিছুই পড়ার বয়স আমার হয়েছে । কিন্তু হায় যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয় । সাতকাহন বইটা নিয়ে প্রথমেই ধরা খেলাম আপুর হাতে । যথারিতী জানলাম কার্ফিউ বলবৎ আছে । সুনীল সমরেশ পড়ার বয়স হয়নি । অগ্যতা হুমায়ূন আর জাফর ইকবালই ভরসা । কলেজের দুই বছর চুটিয়ে হুমায়ূন আহমেদ আর জাফর ইকবালের বই পড়েছি । জাফর ইকবালের বই আগেও পড়েছি, কিন্তু সত্যিকারের মজা পাইছি এই দুই বছরে । ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরীর সদস্য ছিলাম, সেই সাথে বাসার সংগ্রহ নেহাত কম ছিল না । তাই বইয়ের অভাব হয়নি । দুই ভাইয়ের সব লেখাই গোগ্রাসে গিলতাম । হিমু পড়ে উদাস হতাম, তো মিসির আলী পড়ে আবার বিচক্ষণ ব্যাক্তি, তার মাধ্যমেই ট্রেনে করে ঘুরে এসেছি দারূচিনি দ্বীপ আর কলম্ব । মনে আছে জাফর ইকবালের আমি তপু পড়ে চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি । খুব ইচ্ছে করত দুষ্ট ছেলেদের দলের সাথে মিশে যেতে, দীপু নাম্বার টুর মত প্রাচীন গুহায় গুপ্তধন খুজতে, হাত কাটা রবিনের মত বন্ধু পেতে । আর আমার বন্ধু রাশেদ পড়ে শিখেছি রাজাকার হায়েনাদের ঘৃণা করতে , দেশকে ভালবাসতে, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতে ।


এতসব ছাড়া আহসান হাবীব, আব্দুল্লাহ আবু সাইদ স্যার , নিমাই ভট্টাচার্য, জীবনানন্দ দাসের লেখাও পড়েছি । ভালবাসা কি জিনিস তা নিমাই ভট্টাচার্যের মেমসাহেব পড়েই প্রথম বুঝেছি । পাঠ্য বইয়ের বাইরে রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের কিছু বই পড়েছি । কিন্তু শ্রীকান্ত আর দেবদাস ছাড়া শরৎ রচনাবলী পড়া হয়নি । যুগের হাওয়ায় হ্যারি পটার, দ্য দ্যা ভিঞ্চি কোড পড়তে হয়েছে । পটার সিরিজ আমার কাছে তিন গোয়েন্দার মতই প্রিয় । এছড়াও ইমদাদুল হক মিলন, প্রণব ভট্ট আর আনিসুল হকের কিছু বই পড়া হয়েছে । শেষ পড়েছি সৈয়দা ফারজানা সুলতানার জলে ভেজা মন । কিন্তু পড়া হয়নি সুনীল সমরেশ...!!! এই ইউনিভার্সিটি জীবনে প্রবেশ করেও আপুর কাছে শুনতে হয় " আগে বড় হও তারপর সুনীল সমরেশ পড়বা..!!" আমিও আর সেটা নিয়ে মাথা ঘামাইনা । আগ্রহও হারিয়ে ফেলছি সুনীল সমরেশের প্রতি । ও আমার ছোট বোনের কিন্তু সমরেশের প্রধান বইগুলা পড়া শেষ..!!


আজ যখন ফেলে আসা জীবনের পাতা উল্টাই তখন মনে হয় কম বই পড়িনি । তখন হিসেব করতে বসে যাই কি শিখলাম আমি । ভেবে কোন কূল পাইনা । ছোট্ট একটা অনুভূতি বুকের ভেতর থেকে বের হয়ে আসে । জ্ঞানের মহাসমুদ্রে এ আমার ক্ষুদ্র পদচিহ্ন মাত্র ।


ভাল থাকুন । ধন্যবাদ

১৪ এপ্রিল, ২০১১

আমার খেলা দেখা


বিশ্বকাপ দেখতে পারিনি , তাই বলে কি বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া সিরিজ মিস করব..!! কখনই না । যতই কষ্ট হোক এই সিরিজটা দেখতেই হবে । বিশ্বকাপ দেখিনি , তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো আর কি । কিন্তু টিকেট কিনতে গিয়ে আবারও টের পেলাম বাংলাদেশ আসলেই ক্রিকেটীয় জাতি । প্রথম দুই ম্যাচের টিকেট পেলাম না..!! ভাবতেই পারিনি বিশ্বাকাপ শেষ হওয়ার পর পরই এই সিরিজের উপর মানুষের এত আগ্রহ থাকবে । যাই হোক অনেক কষ্টে অনেক ক্রোশ দূর পথ হেটে টিকেট পেলাম ৫ টা । আমরা ৫ বন্ধু মিলেই খেলা দেখব । আমরা কেটেছিলাম ডে নাইট ম্যাচ । প্রথম দুই ম্যাচ বাংলাদেশ ভাল খেলেনি । তাই টেনশনে ছিলাম আমাদের ডে নাইট ম্যাচ যেন ডে তেই শেষ না হয়ে যায়...!!!


১৩ তারিখ ক্লাশ মিস দিলাম শুধু খেলা দেখব বলে । খেলা শুরু দুপুর ২ টা থেকে , বাসা থেকে বের হলাম ১.৩০ টায়..!! ঢাকার রাস্তার চিরাচরিত জ্যাম পেরিয়ে পৌছে গেলাম স্টেডিয়াম এলাকায় । কিছু খেয়ে , গালে পতাকা একে লাইনে দাঁড়িয়ে ঢুকে গেলাম স্টেডিয়ামে । ঢুকেই অবাক চমৎকৃ্ত হলাম এত সুন্দর স্টেডিয়ামটা দেখে । ভাবতে ভালই লাগে যে বাংলাদেশ আসলে অনেক এগিয়ে গেছে । স্টেডিয়ামটা বিশ্বের যেকোন ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সাথে পাল্লা দেয়ার মত । একেবারে সাজানো গোছানো একটা স্টেডিয়াম । তবে ঝামেলা হল আসন পাওয়া নিয়ে । আমাদের আসন ছিল লোয়ার লেভেলে উপরে । কিন্তু ঢুকে দেখি উপরে কোন আসন খালি নাই । অগ্যতা কি আর করা বসে গেলাম অন্য আসনে । ভালই মজা করে খেলা দেখছিলাম । ডিস্টার্ব শুরু হল তখন । যে আসনে আমরা আসন গ্রহণ করেছিলাম তার মালিক এসে হাজির । দিল আমাদের উঠিয়ে , এখন উপায় ?? উপায় একটাই উদ্ধার করতে হবে আমাদের নিজেদের আসন । খুজেও বের করলাম । বসে আছে কয়েকটা যুগল । আহা ইচ্ছে করেনি তাদের ডিস্টার্ব করতে , কিন্তু আমরা ছিলাম নিরুপায় তাই কি আর করা উঠাতেই হল । বসলাম আরাম করে , একেবারে নির্ঝনঝাট ভাবে খেলা দেখছি । এদিকে তো অস্ট্রেলিয়া রান তুলছে একেবারে বুলেট গতিতে । আর বাংলার দামাল ছেলেরা যেন ফিল্ডিং মিসের প্রতিযোগিতা শুরু করছে । হাতে মনে হয় মাখন মাখিয়ে আসছে । তাই বল পিছলে বার বার সীমানা পার হয়ে যাচ্ছে । কিন্তু তাতে কি , আমরা এসেছি ক্রিকেট দেখতে । তাই চার হলে আমরাও লাফিয়ে উঠেছি , আনন্দ করেছি । দেখতে দেখতেই অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ । বাংলাদেশের সামনে টার্গেট ৩৬২, বাংলাদেশ কি পারবে এই রান অতিক্রম করতে ?? আগের দুই ম্যাচের যে অবস্থা তাতে সম্ভব না । তারপরও আশায় ছিলাম । দেখা যাক কি হয় । তামিম আর ইমরুল কায়েস নেমেই পিটাতে লাগল জনসনকে । একটা করে চার হয় আর দর্শকের চিৎকারে কেঁপে উঠে গোটা স্টেডিয়াম । কিছুক্ষন পর তামিম আউট । নাফিস এসে দেখে শুনে খেলতে লাগল , আর ইমরুল রানের চাকা সচল রাখল । মনে হচ্ছিল জিতেই যাবে বাংলাদেশ । দর্শক অপেক্ষা করছিল ইমরুলের সেঞ্চুরির জন্য । কিন্তু বেচার নার্ভাজ নাইন্টিজে এতই নার্ভাস ছিল যে মামুলি একটা বলেই আউট । সাকিব এরপর নাফিস , সাকিব দুজনেই অবিবেচকের মত শট খেলে আউট । তবে ভাল লাগছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খেলা । বেচারার প্রতিভা বাংলাদেশ কখনই ব্যবহার করতে পারেনি । তাই রিয়াদ বেশী বল না খেলে ফিফটি মারল । কিন্তু বাংলাদেশের ইনিংস শেষ ২৯৬/৬ এ । এটাই অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান । ম্যাচের প্রাপ্তি এইটুকুই । এটা বাংলাদেশ কোচ সিডন্সের শেষ ম্যাচ । আফসোস সিডন্সের শেষটা সুন্দর হল না । তবে সিডন্সের কাছে কৃ্তজ্ঞ থাকবে বাংলাদেশ । তার সময়েই বাংলাদেশ এতটা উন্নতি করছে । এই ম্যাচে আমার প্রাপ্তি কতটুকু ?? অনেক । হ্যা অনেক । জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখা তাও অস্ট্রেলিয়ার সাথে । তাই অনেক উত্তেজিত ছিলাম । কত যে চিৎকার করেছি বলে বোঝাতে পারব না । এতদিন যাদের টিভিতে দেখেছি তারা আমার সামনে..!! ভাবলেই কেমন যেন লাগে । ব্রাডম্যানের পর অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান রিকি পন্টিং আমার সামনে । কি ভাগ্যবান আমি..!!! মনে হয় না আর কখনও দেখতে পাব পন্টিংকে । মাশরাফি , সাকিব সবাই সামনে..!!! সে এক অদ্ভুত অনুভূতি । বলে আসলে বোঝানো যাবে না । তবে আফসোস প্রাইজ সেরেমনিটা দেখতে পারিনি । কেন জানি পুলিশ তাড়াতাড়ি আমাদের বের করে দিল । মনে হয় দায়িত্ব পালন করে তারা ক্লান্ত । যাই হোক অবশেষে আমার আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখার ইচ্ছা পূরণ হল আমি এতেই খুশি..!!!!


সারাদিন খেলা দেখে খুব ক্লান্ত । আমার আনন্দটা সবার সাথে শেয়ার করতেই রাত জেগে এই পোস্ট লেখা । ভাল লাগলে আমার আরও ভাল লাগবে । খুব ঘুম পাচ্ছে , ঘুমাব । রাত পোহালেই পহেলা বৈশাখ । সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা । ভাল থাকবেন । শুভ রাত্রি

১০ এপ্রিল, ২০১১

স্বপ্ন শুরুর কথামালা...!!!

প্রথমেই পাঠকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি অনেকদিন ব্লগ থেকে দূরে থাকার জন্য । অনেকদিন ভেবেছি আবার লেখা শুরু করি , কিন্তু সময় সুযোগ হয়ে উঠেনি । কিন্তু অবশেষে লেখা শুরু করলাম । আমার এই ব্লগে আগেও কিছু পোস্ট ছিল । কিন্তু সেগুলো একান্তই আমার নিজের কথা ছিল না । সবার জন্য কিছু সলুশনও ছিল । কিন্তু যেহেতু ব্লগটা একান্তই আমার  তাই ভাবলাম এখন থেকে ব্লগে শুধু আমার ভাবনা গুলোই প্রকাশ করব । সেই ভাবনা থেকেই আমার ফিরে আসা । তাই বলা যায় স্বপ্নব্লগের নতুন করে শুরুর সাথে সাথে এটাই আমার প্রথম পোস্ট...!!!

আমার ব্লগিঙের শুরুটা কিন্তু খুব বেশী দিনের নয় । কিন্তু ব্লগ সম্পর্কে জানি সেই ২০০৬ সাল থেকে । তখন অবশ্য আমার নেট সংযোগ ছিল না । সাইবার ক্যাফে অথবা বন্ধুদের বাসা থেকে ব্লগ পড়তাম । তখন অবশ্য বাংলাদেশে সামু ছাড়া আর কোন ব্লগ ছিল না । তাই ইংরেজী ব্লগে ঘুরতাম । বুঝতাম খুবই কম L Lতখন ইংরেজী ভাল না জানার জন্য আফসোস হত (এখনও খুব ভাল জানিনা :D) আর কষ্ট লাগত আমরা ইন্টার্নেট দুনিয়া থেকে কত পিছিয়ে আছি । আমাদের বাংলা ভাষা ইন্টার্নেটে কতটা পিছিয়ে । যাই হোক এভাবেই ভুগতে ভুগতে আমার ব্লগের শুরু । এরপর ধলেশ্বরীতে কত পানি গড়াল , ডিজিটাল সরকার আসল ( তাও বিদ্যুৎ ছাড়া :D) । কত বাংলা ব্লগের জন্ম হল । আর আমিও আমার কম্পিউটারে ইন্টার্নেট সংযোগ নিলাম । এরপর আমাকে আর পায় কে ধুমিয়ে বাংলা ব্লগ গুলো চষে বেড়াতে লাগলাম । ও তখনও কিন্তু আমি ব্লগার হিসেবে আত্নপ্রকাশ করিনি । তখনও শুধু ব্লগ পড়েই যেতাম । আর ভাবতাম মানুষ এত সুন্দর করে গুছিয়ে লেখে কিভাবে ??? বই , পত্র পত্রিকার বাইরেও যে লেখক থাকতে পারে তা আমি তখনই প্রথম বুঝতে পারলাম । এটাও বুঝতে পারলাম ইন্টার্নেট দুনিয়ায় বাংলা ব্লগ , বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ হচ্ছে আর ইন্টার্নেটে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার পেছনে একজন মানুষের কথা না বললেই নয় মেহেদী হাছান খান । অভ্রর নির্মাতা । কারন প্রথম দিকে ইন্টার্নেটে বাংলা লেখা যেত না । আর সামুতেও তাই প্রথম প্রথম ইংরেজী লিখতে হত । তো অভ্রর সাথে সাথে বাংলা ব্লগের পাশাপাশি আমারও উন্নতি ঘটতে লাগল (এখনও আমি অভ্র ছাড়া নরমাল বাংলা লিখতে পারিনা :D) যেহেতু অভ্র আছে তাই এখন আমাকে পায় কে...!!!! যাই করি সব বাংলায় ...!!!

মাঝে মাঝে ভাবি কি লিখব । আমি তো কিছুই জানিনা । কিছুই ভেবে পাইনা । আবার যখন লিখতে বসি টানা লিখতে পারিনা । মানুষের মন আসলেই বিক্ষিপ্ত । মনযোগ ধরে রাখা কষ্টকর( যদিও আমি কখনোই খুব মনযোগী ছিলাম না...!!!) । তারপরও লিখতে বসি । লিখি । কেন লিখি ?? ব্লগিং করব তাই । আর কোন কারন নেই । কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন আমার ব্যাক্তিগত ব্লগের  নাম স্বপ্নব্লগ কেন ?? হ্যা এতা একটা ভাল প্রশ্ন । যেহেতু এটা আমার ব্যাক্তিগত ব্লগ তাই ইচ্ছে করলেই আমি এটা অনেক রকম নাম দিতে পারতাম । আমার ব্লগ, আমার কথা ইত্যাদি ইত্যাদি । কিন্তু স্বপ্নব্লগ কেন দিলাম ?? কারন আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি । কল্পনা করতে ভালবাসি । ড : ইউনূস বলেন মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় । হায় ড : ইউনূস যে নিজেকে স্বপ্নেরও ঊর্ধে নিয়ে গেছেন । এই স্বপ্ন কিন্তু ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্ন না । এটা বাস্তবতার স্বপ্ন । বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন । দেশকে বদলে দেবার স্বপ্ন । কত সুন্দরই না আমাদের দেশ । এত এত সমস্যা থাকা সত্তেও কত সুন্দর করেইনা আমরা টিকে আছি । টিকে আছি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষের দেশ হিসেবে । তাহলে এই সমস্যাগুলো যদি না থাকতো  আরও কতইনা ভাল হত । আহা

আমার খুব গর্ব হয় যে আমি বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছি । এত সুন্দর এত সমৃদ্ধ ইতিহাস আর কোন দেশের আছে কিনা জানা নেই । যুদ্ধের সিনেমা দেখতে আমরা হলিউডের সিনেমা খোঁজ করি । কিন্তু আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কি সিনেমার চেয়ে কোন অংশে কম ? মোটেই না । আর কোন দেশ কি এমন সম্মুখ যুদ্ধ করে ঘোষনা দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করছে ? আমার জানা নেই । কতটা রোমাঞ্চকর আমাদের ইতিহাস । কিন্তু হায় আমাদের ইতিহাস কি কম কষ্টের ?? ৭১ এ দেশের মানুষ যখন মুক্তি প্রত্যাশায় যুদ্ধরত তখন দেশেরই কিছু মানুষ স্বাধীনতার বিরোধীতা করল...!!! মুক্তিযোদ্ধাদের খুজে বের করে হত্যা করা শুরু করল । রেহাই পেলনা শিশু এমনকি নারীরাও । যে নারী নাকি মায়ের জাত সেই নারীকেই ওরা হিংস্র হায়েনার মত ছিড়ে খুড়ে খেল...!!! ধিক তাদের , শত ধিক । আর দেশকে পঙ্গু করতে হত্যা করল দেশের বুদ্ধিজীবিদের । সেই হায়েনাদের কিন্তু আজও বিচার হয়নি । আজও তারা বীর দর্পে  ঘুরে বেড়ায় বাংলার মাটিতে । ঊদ্ধত কথা বলে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে । আর ভাবি কবে হবে এই হায়েনাদের বিচার । আমি আশাবাদী । ওই যে বললাম স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি । আমার স্বপ্ন রাজার মুক্ত সুখী একটা দেশ । আর এই দেশকে গড়তে হবে আমাদেরকেই । আমাদের তরুণদেরকেই ।

আজ এই পর্যন্তই । সামনে আরও নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের সামনে । সেই পর্যন্ত আল্লাহ হাফেজ । ভাল থাকবেন । শুভ রাত্রি

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | coupon codes